মতামত – কলাম
“বাংলাদেশে উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারেনি রাজনীতি। অগ্রগতির সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতি।
জাতীয় জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে দুর্বৃত্তায়ন চলছে। যে যত বড় মাপের দুর্বৃত্ত, সে তত বড় ক্ষমতাবান।
দুর্বৃত্তরা আজ বাংলাদেশের নদী, নদীতে পড়া চর, নদীর বালুতট, তার তলদেশ, পাহাড়, বন, শ্মশানঘাট, কবরস্থান—সর্বস্ব খেয়ে চলেছে। এরাই আদিবাসীদের সর্বস্ব লুণ্ঠন করে ভিটেছাড়া করে। বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের উপাসনালয়ে দেব-দেবীর প্রতিমা, যিশু-মেরির মূর্তি তারা ভেঙে চূর্ণ করে। আমি রামু, কক্সবাজার, নীলায় তাদের বীভৎস ত্রাস দেখেছি। বৌদ্ধমন্দির তছনছ করতে দেখেছি।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন পরম শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। এক রাজনৈতিক ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নান্দনিক নির্বাচন তিনি উপহার দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্র আজ বাজিকরদের হাতে চলে গেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আহূত … তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে তাঁর সাত বিলিয়ন ডলার (৫৬ হাজার কোটি টাকা) গচ্ছিত আছে
দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়ে গেছে লাখ লাখ কোটি কোটি। … শেয়ারবাজারে, ডেসটিনি, হল-মার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপে, বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতির একেকটি মহা উপাখ্যান রচিত হয়েছে। ব্যাংকের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা গোটা জাতীয় আর্থিক ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে।
২০০৫ সালে একটি পার্লামেন্টারি ডেলিগেশনে কানাডা সফরে সুযোগ হয়েছিল কানাডার পার্লামেন্ট অধিবেশন দেখার। সংসদে সরকারের অর্থ কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কনজারভেটিভ পার্টির দলনেতা স্টিফেন হারপার অত্যন্ত জোরালো দীর্ঘ বক্তব্য আমি শুনেছিলাম। রাজধানী অটোয়ায় তখনই গুঞ্জন উঠেছিল সরকার টিকবে না। আমার ঢাকা প্রত্যাবর্তনের আগেই মার্টিন সরকারের পতন ঘটে। পরবর্তী নির্বাচনে স্টিফেন হারপার সরকার গঠন করেন ও প্রধানমন্ত্রী হন। এখনো তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
২০১৫ সাল সমাগত। নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। এ দুর্ভাগা দেশ থেকে সব অপমানের গ্লানি অপসৃত হোক। সব মানুষ দল-মত-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে একত্রে মিলিত হোক। সব আত্মা, সব প্রাণ এক হোক।
দুর্ভাগা দেশ থেকে অপসারিত হোক দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তের দুই জগদ্দল পাথর।”
“প্রধান দুটি বিষয়ঃ
এক. দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা,
দুই. দলের অর্থায়ন।
দেশের বৃহত্তর দল দুটির মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চার একান্ত অভাব রয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে গঠনতন্ত্র রক্ষার জন্য সামান্য আলোচনা হলেও বিএনপিতে এ বিষয়ে তাদের গঠনতন্ত্র তেমন সুবিন্যাসিত নয়।
বাংলাদেশের কোনো দলেই ভাঙন ব্যতিরেকে গত ৩০ বছরে দলের শীর্ষ পর্যায়ে তো নয়ই, এমনকি তৃণমূল পর্যায়েও কোথাও নেতার পরিবর্তন হয়েছে বলে জানা যায়নি।
দলের অভ্যন্তরের গণতন্ত্র নিয়ে পণ্ডিত ব্যক্তিদের যেসব গবেষণা রয়েছে, তাতে দুটি প্রধান উপাদানের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এর একটি বহুমাত্রিক, অন্যটি বিকেন্দ্রীকরণ।
বহুমাত্রিকের ব্যাখ্যায় যা প্রতীয়মান, তা হলো দলের ভেতরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বলয়টি কতখানি বিস্তৃত, যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সর্বজনবিদিত হতে হয় এবং নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কিছুটা কেন্দ্রিক হতে হয়। বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টি নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পার্টি, পার্টি-সমর্থক ও বিভিন্ন জনজীবনের মানুষের চিন্তাধারার সংমিশ্রণ হয়ে থাকে।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে জাতীয় সম্মেলন বা কাউন্সিলের জন্য তিন বছর সময় নির্ধারিত থাকলেও বিএনপির সাংগঠনিক গঠনতন্ত্রে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। ২০০৯ সালের আগে বহু বছর দুই দলের জাতীয় কাউন্সিলে সমাবেশই হয়নি।
পার্টির অভ্যন্তরে গণতন্ত্র নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব কার বা কোন প্রতিষ্ঠানের? … হতে পারে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা দ্বারা নিশ্চিতকরণ।
পার্টির অভ্যন্তরের গণতন্ত্রের অন্যতম উপাদান পার্টির তথা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য প্রার্থী মনোনয়নের পদ্ধতি। এ পদ্ধতি হতে হবে প্রতিনিধিত্বমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক, যেখানে তৃণমূল পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রতিফলিত হবে। প্রায় সব দেশেই প্রাথমিক নির্বাচনের মাধ্যমে নমিনেশনের জন্য প্রার্থী বাছাই করা হয়।”
আর্টিকেলস
- রাজনীতিতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে নাগরিক শক্তি [TahsinVersion2]
- নতুন রাজনীতির সূচনায় নাগরিক শক্তি এবং জনগণের কর্মোদ্যোগ
- নতুন বাংলাদেশের সূচনায় নাগরিক শক্তি
- ইলেকশান ক্যাম্পেইন স্ট্রাটেজি – ট্রাইব
- নাগরিক শক্তির সোশ্যাল মিডিয়া এবং আইটি (IT) স্ট্রাটেজি
- আজকের উপলব্ধিতে বাংলাদেশ (19.09.14)
- Nagorik Shakti And The Story Of Bangladesh
“নাগরিক শক্তির যে কোন সদস্য দলের মেম্বার থেকে ধীরে ধীরে নিজ যোগ্যতায় শীর্ষপদে যেতে পারবেন এবং জনগণের মান্ডেট নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারবেন।
ছেলেবেলায় যিনি জীবিকার তাগিদে পড়াশোনার পাশাপাশি চা বিক্রি করতেন – সেই নরেন্দ্র মোদী এবছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।ভবিষ্যতের কোন এক সময় বাংলাদেশেও অনুরূপ কাহিনী রচিত হবে।
দলের প্রতিটি পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা থাকবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।নির্দিষ্ট সময় অন্তর দলের প্রতিটি পদের জন্য দলের অভ্যন্তরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে নেতারা ধীরে ধীরে দলে উপরের দিকে উঠে আসবেন।পারিবারিকভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দখল করে রাখার সংস্কৃতির অবসান ঘটবে।নির্বাচনের ব্যয়ভার দলীয়ভাবে বহন করা হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক সাংসদ তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, মাহী বি. চৌধুরী, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থদের মত আদর্শবান তরুণ নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।আমরা আদর্শবান দক্ষ যোগ্য তরুণ নেতাদের দেখতে চাই।সম্ভবনাময় তরুণ নেতাদের প্রজেক্টারে প্রেসেন্টেশানের সুযোগ দেওয়া হবে। ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। সময় নিয়ে লিডারশীপ স্কিলস ডেভেলাপ করা হবে। নাগরিক সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিরা এবং প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদরা তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
তবে নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে নাম প্রস্তাব হতে হবে। জনপ্রিয়তা গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে দেখা হবে।”