অস্ত্র ও গোলাবারুদ হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী রপ্তানি পণ্য। অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানি শুরু করলে আমরা ড্রোন এর মত আধুনিক প্রযুক্তিও অচিরেই রপ্তানি করতে পারবো।
তবে অস্ত্র ও গোলাবারুদ মত স্পর্শকাতর পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। অস্ত্র ও গোলাবারুদ কোন দেশে কোথায় রপ্তানি করা হচ্ছে, তাদের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন – রপ্তানির সময় এসব বিবেচনা করেই সিধান্ত নেবে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ)।
“অস্ত্র-গোলাবারুদ রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ
অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ)। এ ব্যাপারে অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বিওএফ।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ প্রথম চার কোটি ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানি করেছিল। ৩০ বছর পর আবার এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্তমানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানির কোনো আইন বা নীতিমালা নেই। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘অস্ত্র ছাড়া সবকিছু’ (এভরিথিং বাট আর্মস)—এই নীতি অনুসরণ করে আসছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সেনাসদর অস্ত্র রপ্তানির বিষয়টির অনুমোদন দেয়। এর আগে অনুমোদন দিয়েছে আগের সরকারের আমলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। তৎকালীন কমিটির প্রধান ইদ্রিস আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখনো মনে করি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানি করা যেতে পারে।’
বিওএফের চিঠি সূত্রে জানা যায়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা পরিদপ্তর ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই বাংলাদেশ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানির ব্যাপারে প্রথম আগ্রহ দেখায়। এরপর ২১ জানুয়ারি এই আগ্রহের সূত্র ধরে ‘বিওএফ কর্তৃক অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানিকরণের লক্ষ্যে মতামত প্রসঙ্গে’ শীর্ষক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বিওএফ।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অস্ত্র রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি নীতি আদেশের ২.৩ ধারা সংশোধনের উদ্যোগও নিয়েছে। ‘রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার ক্ষমতা’ শিরোনামের এই ধারায় বলা হয়েছে, ‘উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সরকার পরিশিষ্ট-১-এ বর্ণিত কোনো নিষিদ্ধ পণ্য রপ্তানির অনুমতি প্রদান করতে পারবে। এ ছাড়া, সরকার বিশেষ বিবেচনায় কোনো পণ্য রপ্তানি, রপ্তানি-কাম-আমদানি অথবা পুনঃ রপ্তানির অনুমতিপত্র জারি করতে পারবে।’
রপ্তানি আদেশ সংশোধনে বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদের তৈরি করা একটি সারসংক্ষেপ অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গাজীপুরের জয়দেবপুরে অবস্থিত সমরাস্ত্র কারখানাটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৯৭০ সালে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ পরিচালিত এই কারখানা মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৮২ সালে এর আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে পাঁচটি কারখানা পরিচালনা করছে বিওএফ। চীন, অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, জার্মানি ও ইতালির প্রযুক্তি সহায়তায় বিওএফ বর্তমানে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সংস্থা।
বিশ্বের সব দেশের ওপরই বিশ্বব্যাংক প্রতিবছর ‘বিশ্ব উন্নয়ন নির্দেশক: সামরিক ব্যয় ও অস্ত্র স্থানান্তর’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
শীর্ষ ১০ অস্ত্র রপ্তানিকারক: স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) অস্ত্র উৎপাদন, রপ্তানি ও আমদানি নিয়ে সমীক্ষা করে। গত মার্চে ‘ট্রেন্ডস ইন ইন্টারন্যাশনাল আর্মস ট্রান্সফার’ শীর্ষক সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইউক্রেন, ইতালি ও ইসরায়েল।
– অস্ত্র-গোলাবারুদ রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ
অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানি বিষয়ক তথ্য
বাংলাদেশে হোক ড্রোন শিল্পের বিকাশ
এর আগে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে বর্ষবরণের নিরাপত্তা মহড়ায় প্রথমবারের মতো একটি বোমা অপসারণকারী রোবটের ব্যবহার করে ডিএমপি। সম্প্রতি যুক্ত হয় মোবাইল কন্ট্রোল।”
– ড্রোন দিয়ে নজরদারি করবে ঢাকার পুলিশ
আইএসপিআর বলছে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় সব ধরনের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধি এবং বিমান বাহিনীর নির্ধারিত নিয়ম মেনে।
ফলে ‘নির্ধারিত আকাশ পথগুলো’ ছাড়া অন্য স্থানের আকাশে এসব ড্রোন বা রিমোট কন্ট্রোল চালিত হালকা বিমান ওড়ালে তা সামরিক-বেসামরিক উড়োজাহাজের নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক ঝুঁকি’ সৃষ্টি করতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
“বাংলাদেশের আকাশসীমা রক্ষার গুরু দায়িত্ব বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উপর অর্পিত বিধায় বাংলাদেশের আকাশে যে কোনো ধরণের উড্ডয়নের ব্যাপারসমূহ বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষের অবহিত হওয়া অত্যাবশ্যক।”
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি ও রেগুলেশনস বিভাগের পরিচালক এস এম নাজমুল আনাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যে কোনো ধরনের ‘ফ্লাইং মেশিন’ আকাশে ওড়াতে গেলে আগে তাদের অনুমতি নেয়ার নিয়ম।
“যেগুলো খেলনা ফ্লাইং অবজেক্ট, ৫ বা ১০ ফুট ওপরে ওঠে- সেগুলোর কথা আলাদা। কিন্তু যেটাকে ড্রোন বলা হচ্ছে- সেটি আরো বড়, আরো ক্ষমতাশালী। হয়তো ক্যামেরাও লাগানো রয়েছে, এগুলো ১০০ থেকে ২০০ ফুট উঠতে পারে। এগুলোর ক্ষেত্রে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে।”
পরীক্ষামূলক উড্ডয়নেও অনুমতি লাগবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনেকেই না জেনে ওড়াচ্ছেন। হয়তা তারা নিয়মই জানেন না। তবে বিষয়টি আমাদের জানা থাকতে হবে। তা না হলে হয়তো সেই সময় সেই দূরত্বে একটি লো-ফ্লাইং হেলিকপ্টার উড়ে গেল, তখন কি হবে?”